প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শারীরিক শাস্তি নিষিদ্ধের উদ্যোগ — শিশুদের নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত

প্রাথমিক স্কুলে শিশুদের শারীরিক শাস্তি বন্ধ হচ্ছে কি বিস্তারিত যানুন?

বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষার পরিবেশ দিনে দিনে আধুনিক হলেও এখনো অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি প্রশ্ন থেকে যায়—শিশুদের শারীরিক শাস্তি কি বন্ধ হচ্ছে?



২০১১ সালে আদালতের রায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শারীরিক ও মানসিক শাস্তি নিষিদ্ধ হলেও, বাস্তব চিত্র এখনো পুরোপুরি পরিবর্তন হয়নি। শহরে তুলনামূলক সচেতনতা বাড়লেও গ্রামীণ এলাকার বহু স্কুলে এখনো শিক্ষকরা শারীরিক শাস্তি প্রয়োগ করেন।

নিষেধাজ্ঞা থাকলেও শাস্তি চলছেই!

সরকারি নীতিমালায় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা ও ধৈর্যের মাধ্যমে পাঠদান করবেন—এটা পরিষ্কারভাবে বলা থাকলেও বাস্তবে দেখা যায়, উপস্থিতি কম হলে বা পড়া না পারলে এখনো কান ধরে উঠবস, বেতের বাড়ি—এই সব দৃশ্য অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটে।

শিশুদের উপর প্রভাব কেমন?



মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধরনের শাস্তি শিশুদের মনে ভয়, অপমানবোধ এবং আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরায়। অনেকে স্কুলে যেতে অনিচ্ছুক হয়ে পড়ে, ফলে পড়াশোনায় স্থায়ী ক্ষতি হয়।

আধুনিক শিক্ষায় কী হওয়া উচিত?

  • শিক্ষকদের নিয়মিত মনোবিজ্ঞানভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়া
  • স্কুলে 'পজিটিভ ডিসিপ্লিন' প্রবর্তন করা
  • অভিভাবকদের সচেতন করা যাতে তারা নির্ভয়ে অভিযোগ করতে পারেন
  • শিশুদের শেখানোর জন্য আনন্দময় পদ্ধতি চালু করা

সরকারি উদ্যোগ কতটা কার্যকর?



সরকার শারীরিক শাস্তি নিষিদ্ধ করলেও মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং যথেষ্ট নয়। কিছু শিক্ষক এখনো পুরনো ধ্যান-ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। এই জায়গাতেই প্রয়োজন তদারকি ও সচেতনতা বৃদ্ধির।

উপসংহার

শিশুরা যেন ভালোবাসা ও নিরাপত্তার মধ্যে বেড়ে উঠতে পারে, সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের দায়িত্ব। ভয় দেখিয়ে নয়, ভালোবেসে শেখানোই শিক্ষার প্রকৃত সৌন্দর্য। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে একটি শিক্ষিত প্রজন্ম গড়তে চাই, তবে প্রাথমিক স্কুলে শারীরিক শাস্তির মতো প্রথা চিরতরে বিদায় নিতে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন